প্রধানমন্ত্রী ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ


প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ
প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার সময়ই বলেছিলেন,  কোন খাতে কত আর্থিক সাহায্য, ধাপে ধাপে তা ঘোষণা করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সেই মতোই প্রথম দিন ক্ষুদ্র, মাঝারি ও অতিক্ষুদ্র শিল্পের জন্য বড়সড় প্যাকেজের ঘোষণা করলেন নির্মলা সীতারামন। মোট ছ’টি পদক্ষেপ করা হয়েছে। এই ক্ষেত্রকে অনেকটাই স্বস্তির বার্তা রয়েছে বলে মনে করছেন আর্থিক বিশেষজ্ঞরা। মোট ৩ লক্ষ কোটির প্যাকেজ দেওয়া হবে এই ক্ষেত্রে। তার মধ্যে ঋণের সুবিধা থেকে নানা ক্ষেত্রে এই সুবিধা পাবে এই সংস্থাগুলি। এ ছাড়া EPF এবং TDS এ কম টাকা কেটে হাতে বেশি টাকা দেওয়ার সংস্থানও করেছেন অর্থমন্ত্রী। রয়েছে রিয়েল এস্টেট সংস্থা, ঠিকাদারদের জন্য সুবিধার ঘোষণাও। 
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ  ঠেকাতে লকডাউনের জেরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের। সেই ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতে বড়সড় আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী। ২০ লক্ষ কোটির প্যাকেজের মধ্যে ৩ লক্ষ কোটির তহবিল তৈরি করে এই ক্ষেত্রকে ঋণ দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘এই ছোট সংস্থাগুলি চার বছরের জন্য ঋণ নিতে পারবেন। তার জন্য ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি ফিস জমা দিতে হবে না। ব্যাঙ্ক গ্যারান্টর হবে সরকার।  এই ঋণ দেওয়া হবে চার বছরের জন্য। তার মধ্যে প্রথম এক বছর ঋণের টাকা ফেরত দেওয়া হবে না।’’
নির্মলা সীতারামনের বক্তব্য:
আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত করা হবে 
এর ফলে ৫০ হাজার কোটি টাকা সাধারণ মানুষের হাতে যাবে 
আগামিকাল থেকেই এটা কার্যকর করা হবে 
অর্থাৎ আগে যা টিডিএস কাটা হত, এখন তার ২৫ শতাংশ কমানো হবে  

আগামিকাল থেকে ৩১ মার্চ ২০২১ পর্যন্ত টিডিএস ও টিডিএস কমানো হচ্ছে ২৫ শতাংশ
রিয়েল এস্টেটের ক্ষেত্রে যে সব প্রকল্প চলছে, সেগুলির মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়িয়ে দেওয়া হবে 
নগরোন্নয়ন মন্ত্রক একটা নির্দেশিকা পাঠাবে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে 
ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির টাকাও কিছুটা ফেরত দেওয়া হবে 
পাবলিক-প্রাইভেট সংস্থার ঠিকাদারির ক্ষেত্রেও এই নিয়ম কার্যকর করা হবে  


রেল, রাস্তা বা অন্য কোনও ক্ষেত্রে যে সব ঠিকাদাররা সরকারি কাজ করছেন, তাঁদের কাজ শেষ করার জন্য ৩ থেকে ৬ মাস বাড়ানো হচ্ছে
তবে এর সুবিধা গ্রাহকদের দিতে হবে 
এই প্রকল্পের মাধ্যমে এই সংস্থাগুলি ঋণ নিতে পারবে 


এই সব সংস্থার জন্য ৯০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ দেওয়া হবে
সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ও বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলি বিরাট অর্থসঙ্কটে ভুগছে 
এর ফলে ঋণ নিতে পারবে সংস্থাগুলি, কোনও গ্যারান্টি লাগবে না, সরকার গ্যারান্টর হবে 
৪৫ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত সুবিধাও দেওয়া হবে, এই প্রকল্প আগে থেকেই চালু আছে, কিন্তু তার চরিত্র কিছুটা বদল করা হয়েছে  

৩০ হাজার কোটির একটি প্যাকেজ এই ক্ষেত্রের জন্য দেওয়া হবে
নন ব্যাঙ্কিং ফাইনান্সিয়াল কোম্পানিজ (এনবিএফসি)-এর ক্ষেত্রে বহু সংস্থা বিরাট সমস্যার মুখে পড়েছে, হাউসিং ফাইনান্স এবং মাইক্রোফাইনান্স সংস্থাও সমস্যায় পড়েছে  
এর ফলে সংস্থার ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে, তারা হাতে নগট টাকা বেশি পাবেন
তবে সরকারি কর্মীদের ক্ষেত্রে ১২ শতাংশই কাটা হবে 
কর্মীদের থেকেও ১০ শতাংশ কাটা হবে 

আগামী তিন মাস চাকরিদাতাদের জন্য ইপিএফ-এর ১২ শতাংশ দিতে হবে না, দিতে হবে ১০ শতাংশ
আগে মার্চ, এপ্রিল ও মে এই তিন মাসের জন্য দেওয়া হয়েছিল, সেটা বাড়িয়ে জুন, জুলাই অগস্ট-এরও করে দেওয়া হচ্ছে 
ইপিএফ থেকে টাকা তোলার সুবিধা পাবেন এই ক্ষেত্রে কর্মরত শ্রমিকরা  

৪৫ দিনের মধ্যে এই সমস্ত সংস্থার সরকারের কাছে পাওনা সমস্ত বকেয়া মেটানো হবে
সেই কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ই-কমার্সের ব্যবস্থা করতে হবে 
করোনাভাইরাসের জন্য এর পর প্রদর্শনী বা মেলায় গিয়ে বিক্রি করা অসম্ভব হয়ে পড়বে 
স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে 
এর ফলে এই সমস্ত টেন্ডারে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পও অংশগ্রহণ করতে পারবে 

২০০ কোটি পর্যন্ত সরকারি টেন্ডারে ‘গ্লোবাল টেন্ডার’ করা হবে না
এর পাশাপাশি তাঁদের ক্ষমতাও বাড়বে, তাঁরা শিল্প বাড়ানোর সুযোগ পাবেন 
এর ফলে আরও বেশি সংস্থা মাইক্রো ক্ষেত্রের অন্তর্ভূক্ত হবে 
এমনকি বিনিয়োগ এক কোটি এবং টার্নওভার ৫০০ কোটি টাকা হলেও এখন থেকে সেই সংস্থাকে মাইক্রো ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে ধরা হবে 

উৎপাদন শিল্পে মাইক্রো ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে আগে ২৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ ছিল, এখন সেটা বাড়িয়ে করা হয়েছে এক কোটি টাকা পর্যন্ত
এখন বিনিয়োগ করা মূলধনের পরিমাণের সঙ্গে বাৎসরিক টার্নওভার যোগ করা হয়েছে 
এমএসএমই-র সংজ্ঞা বদল করা হয়েছে  
৫০ হাজার কোটি টাকার তহবিল তৈরি করা হয়েছে যা অপেক্ষাকৃত সক্ষম ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য দেওয়া হবে 
২০ হাজার কোটি নগদ সাহায্য করা হবে দুর্বল ও ঋণগ্রস্ত সংস্থার জন্য 
চার বছরের জন্য় এই ঋণ দেওয়া হবে, তার মধ্যে প্রথম ১২ মাস অর্থাৎ এক বছর ঋণ পরিশোধ করতে হবে না 
তার জন্য় কোনও গ্যারান্টি লাগবে না 
ঋণের উপর এক বছরের মোরেটরিয়াম দেওয়া হবে

৩ লক্ষ কোটি টাকার ঋণের ব্যবস্থা করা হবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য
মোট ১৫টি পদক্ষেপ করা হয়েছে, তার মধ্যে ৬টি পদক্ষেপ ক্ষুদ্র, মাঝারি ও অতিক্ষুদ্র ক্ষেত্রের জন্য 
করদাতাদের কর দেওয়ার পদ্ধতি অনেক সরল করা হয়েছে 
দেশের গরিব মানুষদের জন্য যথাসাধ্য করেছি 
প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ প্যাকেজ ঘোষণা হয়েছে 
এ ছাড়া কৃষি, শিল্প-সহ প্রায় সব ক্ষেত্রে বিপুল সংস্কার হয়েছে 
উজ্জ্বলা যোজনায় বিনামূল্যে গ্যাস দেওয়া হচ্ছে 
ব্যাঙ্ক মিত্ররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা দিয়ে আসছেন 
সেই টাকা আনতে ব্যাঙ্কে যাওয়ারও প্রয়োজন নেই 
গরিবদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা দেওয়া হচ্ছে 
এই লকডাউনের সময় তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে 
২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশে অনেক আর্থিক সংস্কার হয়েছে 
আত্মনির্ভর ভারত’-এর অর্থ দেশের নিজস্ব শক্তি বাড়ানো, বিশ্ব বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা 
এই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য স্থানীয় উৎপাদনে জোর দেওয়া  
পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী 
প্রকল্পের নাম ‘আত্মনির্ভর ভারত’, এই প্রকল্প ভারতকে স্বনির্ভর করে তোলার জন্য
প্রধানমন্ত্রী ২০ লক্ষ কোটির প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, আশা করি আপনারা সবাই জানেন  

এই বিষয়টি যদি আপনি সরাসরি দেখতে চান তাহলে নীচে দেওয়া ভিডিওতে ক্লিক করুন ও ভালো লাগলে আমাদের চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করে নিন




Post a Comment

0 Comments