নতুন রেশন কার্ড নেই?
রেশন তুলতে বিশেষ কুপন খাদ্যদপ্তরের
করোনার
কারণে লকডাউনের জেরে গত কয়েক দিন ধরে দেশের গরিব মানুষের রুটি-রুজি কার্যত বন্ধ।
এরাজ্যেও এর ব্যতিক্রম নেই। এই কঠিন পরিস্থিতিতে গরিব মানুষ যাতে দু’মুঠো খেয়ে
বাঁচতে পারে, সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী ছ’মাস বিনামূল্যে রেশনে চাল ও গম বা আটা দেওয়ার কথা
ঘোষণা করেছেন। সব মিলিয়ে এ রাজ্যে বিনা পয়সায় রেশন
প্রাপকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৮৬ লক্ষ। আর কম দামে চাল-গম কিনতে পারবেন প্রায় আরও ১ কোটি ২০ লক্ষ
মানুষ।
কিন্তু
বিনা পয়সায় রেশন প্রাপকদের মধ্যে তিন লক্ষ মানুষের কাছে খাদ্য দপ্তরের তৈরি নতুন
কার্ড পৌঁছয়নি। তবে এই তিন লক্ষ গরিব মানুষ যাতে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন, সেজন্য দপ্তর তাদের জন্য বিশেষ কুপনের ব্যবস্থা
করছে। জেলাওয়াড়ি এই কুপন বিডিওদের মাধ্যমে শীঘ্রই ওই গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া
হবে। করোনা পরিস্থিতিতে এই জরুরি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়
মল্লিক। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ সোমবার এই তিন লক্ষ কার্ড না পাওয়া গ্রাহকের
নাম-ঠিকানা জেলাশাসকদের কাছে পাঠাবে খাদ্য দপ্তর। মঙ্গলবার থেকে তা চলে যাবে
বিডিওদের কাছে। বিডিওরাই ওই কুপন পৌঁছে দেবেন গ্রাহকদের বাড়িতে। এক সপ্তাহের মধ্যে
এই ব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকর করা হবে বলে রবিবার খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।
জ্যোতিপ্রিয়বাবুর কথায়, লকডাউন কেন্দ্রিক অস্বাভাবিক
পরিস্থিতিতে ডাক যোগাযোগ দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সেকারণে এত মানুষের কার্ড
তাঁদের বাড়িতে পৌঁছয়নি। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণামতো বিনা পয়সায় আগামী
ছ’মাসের রেশন থেকে আমরা তাঁদের বঞ্চিত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সোমবারই এই
নামের তালিকা জেলাশাসকদের কাছে পাঠানো হবে।
তিনি
আরও জানান, এই অস্বাভাবিক
পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের এক বারে এক মাসের রেশন দিয়ে দেওয়া হবে। তবে একটি নির্দিষ্ট দিনে সবাই রেশন দোকানে
গিয়ে জিনিস চাইলে তা দেওয়া সম্ভব হবে না। কারণ, একজন ডিলারের পক্ষে এত সামগ্রী ছোট গুদামে মজুত করা অসম্ভব। তাই ডিলাররাই
ঠিক করে দেবেন কোন দিনে কোন পাড়ার গ্রাহকরা রেশন তুলবেন। বিষয়টি জেলাশাসকের
পাশাপাশি খাদ্য দপ্তরের স্থানীয় আধিকারিকরা মনিটর করবেন। গ্রাহকদেরও এব্যাপারে
সহযোগিতা করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর
কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারও চালকল মালিকদের এনিয়ে বার্তা পাঠান। শেষ পর্যন্ত
শনিবার থেকে পূর্ব বর্ধমান, পুরুলিয়া,
বাঁকুড়া, হুগলি, উত্তর ও
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু চালকল খুলতে শুরু করে। কাছাকাছি থাকা শ্রমিকদের বিশেষ
পাশ দিয়ে লকডাউনের মধ্যে কারখানায় আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী জানান,
চাল সরবরাহের পরিস্থিতি দু’দিনে অনেকটা উন্নত হয়েছে। সোম ও
মঙ্গলবারের মধ্যে বাকি জেলাগুলিতেও সব চালকল খুলে যাবে। বন্ধ থাকার পর চালকলগুলি
যে ফের খুলতে শুরু করেছে