প্রাথমিকে ১৫ হাজার শিক্ষক
নিয়োগ রাজ্যের
পরীক্ষার দিন ঘোষণা হবে শীঘ্রই
পরীক্ষার দিন ঘোষণা হবে শীঘ্রই
পুরভোট মিটলেই দামামা বাজতে চলেছে প্রাথমিক শিক্ষক
নিয়োগের টেট-এর। স্কুলশিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, দ্রুত এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা
হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়াও পুজোর আগেই শেষ করে ফেলার চেষ্টা চলছে। সূত্রের খবর,
১৫ হাজারেরও বেশি শূন্যপদে নিয়োগ হতে পারে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, দ্রুত প্রাথমিক
শিক্ষক নিয়োগ করার উদ্যোগ নিচ্ছে শিক্ষা দপ্তর। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ দিয়ে দেওয়া হবে। কয়েক হাজার শূন্যপদে টেটের
মাধ্যমে এই নিয়োগ হবে।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের শেষ পরীক্ষা হয়েছিল ২০১৫
সালে। ফলপ্রকাশ হয়েছিল ২০১৬ সালে। তারপর বিভিন্ন মামলায় জর্জরিত হতে হয় প্রাথমিক
শিক্ষা পর্ষদ তথা রাজ্য সরকারকে। যদিও, নিয়োগ শেষ করতে সমর্থ হয় রাজ্য সরকার তথা পর্ষদ। নিয়োগ
শেষ হতে জানা যায়, মোট সংখ্যাটা প্রায় ৩৫ হাজার। এরপর ২০১৭
সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। কয়েক লক্ষ আবেদনও জমা পড়ে।
কিন্তু সেই পরীক্ষা আর হয়নি। শূন্যপদ নিয়ে জটিলতার কারণেই পরীক্ষা থমকে যায় বলে
সেবার জানা গিয়েছিল। সেই পরীক্ষা এবার দিনের আলোর মুখ দেখতে চলেছে।
শিক্ষা দপ্তর এখনও পর্যন্ত জানাচ্ছে, আগে আবেদন করা প্রার্থীদের আর নতুন
করে আবেদন করতে হবে না। এর পাশাপাশি নতুন প্রার্থীদেরও আবেদন করার সুযোগ দেওয়া
হবে। নতুন করে আরও কয়েক লক্ষ আবেদন জমা পড়তে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। শিক্ষক
শিক্ষণের কেন্দ্রীয় নিয়ামক সংস্থা এনসিটিই-র নিয়ম অনুযায়ী, ডিএলএড
ডিগ্রি থাকলে এই পরীক্ষায় বসতে পারবেন প্রার্থীরা। তাই, আগের
মতো ১৯-২০ লক্ষ ছোঁবে না পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। তবু, মোট
পরীক্ষার্থীর সংখ্যা পাঁচ লক্ষ ছাড়াতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এনসিটিই-র নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি বছর টেট নিতে হবে। কিন্তু
বিভিন্ন জটিলতায় রাজ্য সরকার তথা পর্ষদ তা নিতে পারেনি। তার উপর, বিভিন্ন সরকারি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, পড়ুয়া
সাপেক্ষে প্রাথমিক শিক্ষকদের ঘাটতি খুব একটা নেই। তবে যা রয়েছে, সেটা হল অসম বিন্যাস। প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোথাও পড়ুয়া রয়েছে, শিক্ষক নেই। আবার শহরাঞ্চলে পড়ুয়া নেই, তবে শিক্ষক
রয়েছেন একাধিক। এটাকে ঠিক করতেই ‘র্যাশনালাইজেশন’ বা সুষম বিন্যাসের চেষ্টা শুরু
করেছিল স্কুলশিক্ষা দপ্তর। বদলির মাধ্যমেই তা করা হচ্ছিল। কিন্তু দেখা যায়,
এই বদলির আওতায় যাঁরা আসছেন, তাঁরা অনেকেই
শিক্ষক নেতা। এমনকী, পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক
সমিতির অভিযোগ ছিল, বেছে বেছে তাঁদের নেতাদের নাম বদলির
তালিকায় রাখছে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন। এ নিয়ে নেতারা বিকাশ ভবনে তদ্বিরের পর তদ্বির
করায় থমকে যায় সেই প্রক্রিয়া।
তবে, দীর্ঘদিন
নিয়োগ না হওয়ায় মোট শূন্যপদের সংখ্যা বেশ অনেকটাই বেড়েছে। বেশ কিছু এলাকায় নতুন
স্কুলের জন্য নতুন পদও অনুমোদন পেয়েছে। তাই নিয়োগ অবশ্যম্ভাবী ছিলই। কিন্তু
সূত্রের খবর, বেশ কিছু আইনি জটিলতাও রয়েছে। তাই সেগুলির জন্য
কিছু শূন্যপদ হাতে ধরে রাখতে হবে সরকারকে। তবে, সরকারের এই
ঘোষণায় আশায় বুক বাঁধছেন পরীক্ষার্থীরা। স্কুল শিক্ষক ছাড়া আর কোনও ক্ষেত্রে
সরকারের এতবড় নিয়োগ হয় না। তাই সবার নজর থাকে এই দিকেই। এই ঘোষণার ফলে ভোটের
আগে অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থায় চলে যাবে শাসকদলও।